খুলনায় সেতুর নিচে সাংবাদিকের লাশ, দেহে আঘাতের চিহ্ন

খুলনার খানজাহান আলী সেতুর (রূপসা সেতু) নিচ থেকে গতকাল রবিবার রাতে সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, এই সাংবাদিকের ডান হাত ও মুখমণ্ডলে আঘাতের চিহ্ন ছিল। বুলু (৬০) দৈনিক সংবাদ প্রতিদিনের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন। তিনি খুলনা প্রেস ক্লাব ও খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের (কেইউজে) সদস্য ছিলেন।
রূপসা নৌ পুলিশ সূত্র জানায়, রোববার রাত সোয়া ৮টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। সঙ্গে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে তাঁর পরিচয় জানা যায়। র্যাব-৬-এর উপ-অধিনায়ক মেজর মারুফ লাশের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় লোকজন গতকাল সন্ধ্যায় সেতুর দুই নম্বর পিলারের বেসমেন্টে নদীতে একটি মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশকে অবহিত করে।
পরে লবণচরা পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা সেখানে গিয়ে নৌ পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন। তারপর নৌ পুলিশ ওই মরদেহ উদ্ধার করে। সংবাদ জানার পর পিবিআই ও সিআইডির সদস্যরাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তাঁরা বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছেন।
র্যাব, কোস্ট গার্ড ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। নৌ পুলিশ রূপসা ফাঁড়ির এসআই বেল্লাল হোসেন জানান, মৃত ওয়াহেদ-উজ-জামানের পরনে ছিল নীল রঙের গ্যাবার্ডিন প্যান্ট ও আকাশি রঙের টিশার্ট। তাঁর ডান হাত ও মুখমণ্ডল ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় ছিল।
কেউ কেউ ঘটনার পর দাবি করছিলেন, বুলু সেতুর ওপর থেকে ঝাঁপ দিয়েছেন। তবে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, সেতুর ওপর থেকে ঝাঁপ দেওয়ার বিষয়টি রহস্যজনক।
কারণ সানগ্লাস পরে কেউ আত্মহত্যা করবে নাকি? যেখানে ঝাঁপ দিয়েছেন, রূপসা নদীর ওখানে পানি ছিল না। ঝাঁপ দিলে পানিতে না পড়ে পিলারের বেসমেন্টে পড়ল কিভাবে? তাঁর শরীরে বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।
লবণচরা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই রহিম জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর লাশ উদ্ধারের জন্য নৌ পুলিশকে জানানো হয়।
জানা গেছে, পিবিআই ও সিআইডির টিম এই সাংবাদিকের মৃত্যুর কারণ বের করার চেষ্টা করছে। সংবাদ পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নৌ পুলিশ রূপসা ফাঁড়ির এসআই বেল্লাল হোসেন জানান, উদ্ধারের পর সাংবাদিক বুলুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
প্রসঙ্গত, সাংবাদিক বুলু সর্বশেষ সংবাদ প্রতিদিন এর সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি অধুনালুপ্ত দৈনিক আজকের কাগজের খুলনা প্রতিনিধি ছিলেন।