এজলাসে বিচারকের সামনেই সাংবাদিককে মারধর

শেয়ার করুন

সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা লতিফ সিদ্দিকী ও সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নার জামিন আবেদন নাকচ করে দিয়েছে আদালত।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম হাসিব উল্লাস পিয়াস শুনানি নিয়ে জামিন নামঞ্জুর করেন। এদিকে, সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান পান্নার জামিন শুনানিতে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন বেসরকারি টেলিভিশন সময় টিভির সাংবাদিক আসিফ মোহাম্মদ সিয়াম। বিচারক এজলাসে ওই সাংবাদিককে কয়েকজন আইনজীবী এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথি মারেন। এতে গুরুতর আহত হন সিয়াম। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

লতিফ সিদ্দিকী এবং সাংবাদিক পান্নার জামিন শুনানির দিন ধার্য ছিল দুপুরে। লতিফ সিদ্দিকীকে আদালতে হাজির করা না হলেও সাংবাদিক পান্নাকে আদালতে হাজির করা হয়। এই সংবাদ সংগ্রহ করতে আদালতে যান কয়েকজন সাংবাদিক। বেলা ২টা ৫৫ মিনিটের দিকে সাংবাদিক পান্নাকে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের ৮ম তলায় ৩০নং এজলাসে তোলা হয়। এক সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান পান্নার কাছে জানতে চান, কারাগারে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে কিনা? এ সময় এজলাসের বেঞ্চে বসে থাকা অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন মাহি আসামির সঙ্গে কথা বলার কারণ জিজ্ঞাসা করেন। বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। এ সময় সাংবাদিককে এজলাস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন। ওই সাংবাদিক তার কাছে জানতে চান, আপনি কোর্ট ইন্সপেক্টর কিনা যে আমাকে বেরিয়ে যেতে বলছেন। বিচারক বললে আমি বেরিয়ে যাব। এরই মধ্যে বিচারক এজলাসে ওঠেন। মামলার শুনানি শুরু হয়। এ সময় একটু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা সাংবাদিক সিয়াম এসে ওই আইনজীবীকে বলেন, উনি বহিরাগত না, একজন সাংবাদিক। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে বেঞ্চ থেকে লাফ দিয়ে উঠেই তার কানের ওপর ঘুষি মারেন।

এ সময় সিয়াম তার হাতে থাকা সময় টিভির মাইক্রোফোন উঠিয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তখন আইনজীবী তাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যান। সিয়াম কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার কয়েকজন সহযোগী তাকে ঘিরে মারধর শুরু করে। আদালত কক্ষে এ পরিস্থিতি দেখে এজলাস থেকে নেমে খাস কামড়ায় চলে যান বিচারক। এ সময় প্রসিকিউশনের পক্ষে থাকা কাইয়ুম হোসেন নয়ন ওই সাংবাদিককে উদ্ধার করে তাকে সাক্ষীর কাঠগড়ার কাছে নিয়ে যান।

এ বিষয়ে সাংবাদিক সিয়াম জানান, শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাংবাদিক পান্নাকে আদালতে আনা হয়। জামিন শুনানি শুরুর আগে বিচারক আদালত কক্ষ থেকে আইনজীবী ও সাংবাদিক ছাড়া অন্যদের বেরিয়ে যেতে বলেন। এসময় আইনজীবীরা পত্রিকার একজন সাংবাদিককেও বেরিয়ে যেতে বলেন। আমি এই ঘটনার প্রতিবাদ করলে আইনজীবী মহিউদ্দিনসহ কয়েকজন আমার উপরে হামলা করে।

সাংবাদিকের ওপর হামলায় এলআরএফের প্রতিবাদ: আদালতে সাংবাদিক আসিফ হোসাইন সিয়ামের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম। সংগঠনের সভাপতি হাসান জাবেদ ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মিশন হামলার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এই ধরনের ঘটনা দেশের স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর চরম আঘাত।


শেয়ার করুন

Similar Posts