শিক্ষকদের নতুন আলটিমেটাম, দাবি না মানলে আমরণ অনশন কর্মসূচী

শেয়ার করুন

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না করা হলে আমরণ অনশন কর্মসূচী দেবেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়াসহ তিন দফা দাবি আদায়ে টানা তিনদিন আন্দোলনে পরেও তাদের দাবি পূরণে কোনো আশ্বাস মেলেনি। একারণে শিক্ষকরা নতুন করে আলটিমেটাম দিয়েছেন।

মঙ্গলবার বিকেলে শিক্ষকরা শহীদ মিনার থেকে মার্চ টু সচিবালয় কর্মসূচি শুরু করেন। তবে হাইকোর্টের কাছাকাছি যেতেই সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে শিক্ষকদের আটকে দেয় পুলিশ। সেখানেই সড়কে অবস্থান নেন শিক্ষকরা। এ অবস্থান কর্মসূচি থেকে অনশনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।

অন্যদিকে সরকারি কলেজের শিক্ষকরা আজ সারাদেশের সব সরকারি কলেজে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করেন। তাদের কর্মবিরতির কারণে দেশজুড়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়। এছাড়া এমপিওভুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছেন।

অবস্থান কর্মসূচিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন, আমরা আর পিছু হটব না। বুধবার সকাল ১১টার মধ্যে দাবি না মানলে শাহবাগে অবস্থান নেব। এরপরও যদি দাবি না মানা হয় তাহলে আমরা যমুনায় যাব-আর শেষ পর্যন্ত আমরণ অনশনে বসব।

তিনি বলেন, আন্দোলন এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। সরকারকে এখনই দাবি মেনে নিতে হবে, অন্যথায় সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি চলবে।

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা যে তিনটি দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন তা হলো—১. মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ভাতা নির্ধারণ, ২. চিকিৎসাভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১,৫০০ টাকা করা, ৩. উৎসবভাতা ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করা।

এই দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হওয়ায় গত রোববার থেকে শিক্ষকরা ‘লাগাতার অবস্থান’ কর্মসূচি পালন করছেন। প্রথম দিন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিলেও দুপুরে পুলিশের অনুরোধে তারা শহীদ মিনারে চলে যান। তবে প্রেস ক্লাবের সামনে থাকা একাংশকে পুলিশ লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে সরিয়ে দেয়।

এরপর থেকেই শিক্ষকদের ওপর ‘পুলিশি হামলার’ প্রতিবাদে সোমবার থেকে সারাদেশের সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি চলছে।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর সরকার এমপিওভুক্তদের বাড়িভাড়া ভাতা ৫০০ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। কিন্তু শিক্ষকরা সেটি প্রত্যাখ্যান করে জানান, সামান্য এ বৃদ্ধি দিয়ে জীবনযাত্রার ব্যয় সামলানো সম্ভব নয়। তাদের দাবি, সরকারি কর্মচারীদের মতো মূল বেতনের শতকরা হিসেবে বাড়িভাড়া ভাতা দিতে হবে।

এরপর ৬ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বাড়িভাড়া ভাতা দুই থেকে তিন হাজার টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব অর্থ বিভাগে পাঠানো হয়। কিন্তু এখনও সেই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

বর্তমানে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা জাতীয় বেতনস্কেল অনুযায়ী বেতন পান। তারা মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসাভাতা ও ১,৫০০ টাকা বাড়িভাড়া ভাতা পান। সম্প্রতি উৎসবভাতা ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হয়েছে, যা শিক্ষকরা ‘অপ্রতুল’ বলে মনে করছেন।


শেয়ার করুন

Similar Posts