‘হাসিনা কেন ভারতে সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন?’ ইউনূস সরকার ভারতীয় দূতকে ডেকে আপত্তি জানাল

(বাঁ দিক থেকে) নরেন্দ্র মোদী, শেখ হাসিনা এবং মুহাম্মদ ইউনূস
শেয়ার করুন

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাকে ভারতের মাটিতে বসে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ দেওয়া নিয়ে আপত্তি তুলল মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকার। বুধবার ঢাকায় ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার পবন ভাদেকে ডেকে পাঠিয়ে এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিদেশ মন্ত্রক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে বলে সে দেশের সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি।

প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনারকে বলেছেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হাসিনাকে মূলধারার ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ করে দেওয়াটা দুই দেশের সুসম্পর্কের পরিপন্থী। তাই অবিলম্বে ভারতীয় গণমাধ্যমে হাসিনার কথা বলার সুযোগ বন্ধ করতে নয়াদিল্লিকে অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা।

গণবিক্ষোভের জেরে গত বছরের ৫ অগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে ঢাকা ছেড়ে দিল্লিতে চলে এসেছিলেন হাসিনা। সেই থেকে ভারতেই ‘অজ্ঞাতবাসে’ রয়েছেন তিনি। সেখান থেকেই নভেম্বরের গোড়ায় ইমেলে তিন সংবাদমাধ্যম- রয়টার্স, এএফপি এবং দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টকে প্রথম সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন তিনি। এর পরে আরও কয়েকটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে ইমেল সাক্ষাৎকার দেন হাসিনা। ওই সাক্ষাৎকারগুলিতে গত বছরের জুলাই-অগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন-পর্বে বিপুল প্রাণহানির দায় চাপিয়েছিলেন পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাঁধে। নাম না করে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন ‘বিদেশি চক্রান্ত’ এবং আন্দোলনকারীদের একাংশের দিকেও।

পাশাপাশি, তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কয়েকটি সাক্ষাৎকারে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন-পর্বে রক্তপাতের জন্য ‘রাজনৈতিক নেতৃত্বের’ দায় রয়েছে বলেও স্বীকার করেছিলেন তিনি। প্রসঙ্গত, এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতের মাটিতে বসে হাসিনার সমাজমাধ্যমে বক্তৃতা করা নিয়েও আপত্তি তুলেছিল ইউনূস সরকার। বাংলাদেশ বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে- বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচারের মুখোমুখি এক কুখ্যাত পলাতক আসামিকে আশ্রয় দেওয়া এবং তাঁকে বাংলাদেশ বিরোধী ঘৃণামূলক বক্তব্য ও সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডে উসকানি দেওয়ার জন্য মঞ্চ করে দেওয়া- এমন পদক্ষেপ দু’দেশের মধ্যে গঠনমূলক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সহায়ক নয়। ভারতীয় কূটনীতিককে বলা হয়েছে, অবিলম্বে শেখ হাসিনার গণমাধ্যমে কথা বলা বন্ধের বিষয়ে তিনি যেন নয়াদিল্লিকে ঢাকার অনুরোধ পৌঁছে দেন।

অক্টোবরের শেষপর্বে ইমেলে তিন সংবাদমাধ্যম- রয়টার্স, এএফপি এবং দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টকে প্রথম সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন হাসিনা। এর পরে কয়েকটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে ইমেল সাক্ষাৎকার দেন তিনি।

আনন্দবাজার পত্রিকা।


শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত