আমতলী পৌরসভার দুইটি ওয়ার্ড কাউন্সিলর শুন্য, সেবা বঞ্চিত সাধারণ মানুষ

শেয়ার করুন

তিন বছর ধরে আমতলী পৌরসভার দুইটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদ শুন্য রয়েছে। এতে দুই ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষ সেবা বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী আসলাম, জাকির ও শাহিন।। দ্রুত পৌরসভার ২ নং এবং ৮ নং ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচন দিয়ে কাউন্সিলর পদ পুরনের দাবী জানিয়েছেন সেবা বঞ্চিতরা।

জনাগেছে, ২০১৯ সালের ২৮ ফেরুয়ারী আমতলী পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে ২ নং ওয়ার্ড থেকে মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম সেলিম পঞ্চায়েত এবং ৮ নংওয়ার্ড থেকে কালু খলিফা কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। শপথ গ্রহনের ছয় মাসের মাথায় অর্থ্যাৎ ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর কাউন্সিলর মোঃ সেলিম পঞ্চায়েত এবং ২০২০ সালের ১৭ জুলাই কালু খলিফা মারা যান। এতে দুই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদ শুন্য হয়।

কাউন্সিলর সেলিম মারা যাওয়ার তিন বছর চার মাস ও কালু খলিফা মারা যাওয়ার দুই বছর ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও ওই দুই ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। কাউন্সিলর না থাকায় ওই দুই ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষ সেবা বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারীসহ বিভিন্ন সেবা পেতে দুই ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষকে অন্য ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের কাছে ধর্না দিতে হয়।

এতে তারা বেশ হয়রানী শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সেবা বঞ্চিতরা। দ্রুত দুই ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচন দিয়ে কাউন্সিলর পদ পুরন করে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি লাঘবের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, একটি পরিচয় পত্র সংগ্রহ করতে গেলে অন্য ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অথবা নারী কাউন্সিলরদের সরনাপন্ন হতে হয়। তারা পরিচয় পত্রসহ ও অন্যান্য সরকারী সেবা প্রদানে গরিমসি করেন। এতে আমাদের বেশ হয়রানীর শিকার হতে হয়।
ভুক্তভোগী শাহানাজ নামের এক নারী বলেন, এক কাউন্সিলরের কাছে পরিচয় পত্র আনতে গিয়েছিলাম। এক সপ্তাহ ঘুরে ফিরে এসেছি। তিনি জানিয়ে দেন, আমার জানতে হবে তারপর পরিচয় পত্র দেব। যেহেতু আমি ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নই।

ভুক্তভোগী মহিউদ্দিন বলেন, কাউন্সিলর না থাকায় হয়রানীর শেষ নেই। সরকারী সকল সেবা থেকে বঞ্চিত ৮ নং ওয়ার্ডের মানুষ।

আমতলী পৌর মেয়র মোঃ মতিয়ার রহমান বলেন, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারনে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে দুই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদ শুন্য হওয়ার চিঠি দিতে পারিনি। দ্রুত স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে চিঠি দিয়ে জানানো হবে।

আমতলী উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ সেলিম রেজা বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে কোন তথ্য নেই। পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান এ বিষয়ে সব জানেন।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন,এ বিষয়টি আমার জানা নেই। নির্বাচন অফিসে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বরগুনা জেলা নির্বাচন অফিসার দীলিপ কুমার হাওলাদার বলেন, পৌরসভার দুই ওয়ার্ডের শুন্য পদের বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে বেশ কয়েকবার চিঠি দিয়েছি। কিন্তু তারা ওই দুই ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচনের পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

বরগুনার আমতলী উপজেলায় গ্রাম গ্রামান্তরে তরমুজ চাষে ব্যস্ত কৃষকরা। কৃষক পরিবার ঘরে বসে নেই। নারী ও শিশুদের নিয়ে মাঠে কাজ করছেন। একটু যেন ফুরসুত নেই তাদের।

গত বছর শত শত একর জমির তরমুজ নষ্ট হওয়াতে অনেক কৃষক মোটা অংকের লোকসান দিয়েছেন। গত বছরের লোকসান পোসাতে এ বছর কৃষকরা আগাম তরমুজ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার আঠারোগাছিয়া, হলদিয়া, সদর ইউনিয়ন, চাওড়া, কুকুয়া ও গুলিশাখালী ইউনিয়নে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষাবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। এ বছর চাষিরা পলিথিনে তরমুজের চারা করেছে। চাষিরা ইতিমধ্যে জমি চাষাবাদ করে তরমুজের চারা বপনে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। গত বছরের লোকসান কাটিয়ে ওঠতে চাষিরা আগাম তরমুজ চাষে পলিথিন ব্যাগে চারা করে্েযছন। ওই চারা তারা রোপনে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন।

শনিবার চাওড়া ইউনিয়নের পাতাকাটা, চন্দ্রা, আঠারোগাছিয়া, পশ্চিম সোনাখালী, হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর- দক্ষিণ রাওঘা, কুকুয়ার কৃষ্ণ নগর ও গুলিশাখালী গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা মাঠে কাজ করছে। মাঠের পর মাঠ চাষাবাদ করে তরমুজ বীজ বপন করছেন। এ কাজ করতে ঘরের নারী ও শিশুরাও বসে নেই। তারাও পুরুষের পাশাপাশি কাজ করছে।

হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর তক্তাবুনিয়া গ্রামের শিবলী শরীফ বলেন, ২০ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। গাছের চারা বড় হয়েছে। প্রতিদিন ১০ জন শ্রমিক কাজ করছেন।

সোনাখালী গ্রামের প্রভাষক নাসির আকন বলেন, এ বছর ৬ একর জমিতে তরমুজ চাষে পলিথিনে চারা তৈরি করেছি। ইতিমধ্যে সকল জমিতে ওই তরমুজ চারা রোপন শেষ হয়েছে।

গুলিশাখালী গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, এ বছর ৫০ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। ইতিমধ্যে ২৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। পলিথিনে চারা করে খেতে বপন করায় আগাম তরমুজ আসবে বলে আশা করি।তিনি আরো বলেন প্রতিদিন গড়ে ১৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন।

পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের মৌলুভী শাহীন মিয়া, আলাউদ্দিন মৃধা, ইসাবুল মৃধা, হাসান হাওলাদার ও নুরে আলম মল্লিক বলেন, গত বছর বেশ লোকসান হয়েছে। ওই লোকসান কাটিয়ে উঠতে এ বছর বেশী জমিতে তরমুজ চাষ করেছি।

আমতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিএম রেজাউল করিম বলেন, এ বছর তরমুজের লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকুল থাকলে কৃষকরা লাভবান হবে।


শেয়ার করুন

Similar Posts