‘বেজমেন্ট থেকেই বিস্ফোরণ হয়েছে’ নিহত -১৮, আহত ২শতাধিক

শেয়ার করুন

রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজারের ক্যাফে কুইন ভবনের বেজমেন্টে বিস্ফোরণ হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনীর বোম্ব ডিসপোজাল টিমের লিডার মেজর মো. কায়সার বারী।

তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হয়েছে বিস্ফোরণ বেজমেন্টে হয়েছে। তবে বিস্ফোরকের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। বিস্ফোরণের ক্ষয়ক্ষতি দেখে আমাদের মনে হয়েছে, এতে কোনো বিস্ফোরক ব্যবহৃত হয়নি।

মঙ্গলবার (৭ মার্চ) রাতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এ তথ্য জানান ঘটনাস্থলে আসা সেনাবাহিনীর বোম্ব ডিসপোজাল টিমের লিডার মেজর মো. কায়সার বারী।

তিনি আরও জানান, আমাদের বোম্ব ডিসপোজাল টিম নিয়ে বেজমেন্টে প্রবেশ করতে পারিনি।

ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য সংস্থা থেকে বলেছে, বিল্ডিংটা ঝুঁকিপূর্ণ। পর্যবেক্ষণের পর আমাদের ইঞ্জিনিয়াররা বলছেন, বিল্ডিংয়ের অনেকগুলো ভিম নষ্ট হয়ে গেছে। কলামগুলোর অবস্থাও ভালো নয়। সে কারণে বিল্ডিংটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

মেজর কায়সার বলেন, আমাদের ডিভাইস দিয়ে যতদূর এপ্রোচ করা সম্ভব হয়েছে আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি। আমাদের যন্ত্র দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রাথমিকভাবে কোনো বিস্ফোরকের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। এই বিল্ডিংটাকে স্টেবল করার পর বেজমেন্টে যেতে পারলে আমরা আরও কাছে থেকে পর্যবেক্ষণ করতে পারব। সিটি কর্পোরেশন ও বুয়েটসহ অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মতামত নিয়ে বিল্ডিংটা স্টেবল করতে হবে।

স্টেবল করতে কত সময় লাগতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্টেবল করতে এক্সপার্ট অপিনিয়ন প্রয়োজন। আমার টিমের মূল এক্সপার্টিজ বোম্ব ডিসপোজাল নিয়ে। তবে স্টেবল করার বিষয়টি জটিল বলে মনে হয়েছে। ভিম ও কলাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভবনটি সাততলা। ভিমের মাধ্যমে লোড কলামে ট্রান্সফার হচ্ছে না। সে কারণে আমরা এখনি বলতে পারছি না স্টেবল করতে কত সময় লাগবে।

বিস্ফোরণের কারণ জানতে চাইলে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, এখানে যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, এ ধরণের বিস্ফোরণ ঘটাতে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরকের প্রয়োজন হত। সে পরিমাণ বিস্ফোরক ব্যবহার হলে আমরা গন্ধ পেতাম। আমাদের ডিভাইস ও বিভিন্ন সংস্থার ডগ স্কোয়াডও বিস্ফোরকের কোনো উপস্থিতি পায়নি।

এদিকে, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে কমপক্ষে ১৮ জনের লাশ রাখা হয়েছে। আর ২০০ জনের বেশি মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে ১০০ জনের বেশি মানুষকে হাসপাতালে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

নিহতরা হলেন-

১. মো. সুমন (২১), ১ নং সুরি টোলা, বংশাল ঢাকা, গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মেঘনা থানা।
২. মো. ইসহাক মৃধা (৩৫), কাজির হাট, বরিশাল। ইসলামপুরে কাপড়ের ব্যবসা করতেন।
৩. মো. মুনসুর হোসেন (৪০), পশ্চিমপাড়া যাত্রাবাড়ী।
৪. মো. ইসমাইল (৪২), ৯৭ লুৎফর রহমান লেন, আলু বাজার।
৫. মো. আল আমিন (২৩), পশ্চিম লালপুর, মতলব, চাঁদপুর। আলামিন বিবিএ শিক্ষার্থী বলে তার ভাই হাবিবুর রহমান জানান।
৬. মো. রাহাত হোসেন (১৮), মাস্টার বাড়ি, দক্ষিণ চুনকুটিয়া, কেরানীগঞ্জ।
৭. মমিনুল ইসলাম (৩৮), ১১৫/৭/৫ ইসলামবাগ, চকবাজার।
৮. নদী বেগম (৩৬), ১১৫/৭/৫ ইসলামবাগ, চকবাজার থানা।
৯. মো. মাঈন উদ্দিন (৫০), গ্রাম-সৈয়দপুর, মুন্সিগঞ্জ সদর।
১০. নাজমুল হোসেন (২৫), ৪৭ নং কে পি ঘোষ স্ট্রিট, বংশাল।
১১. ওবায়দুল হাসান বাবুল (৫৫), চর বেউথা গ্রাম, মানিকগঞ্জ সদর।
১২. আবু জাফর সিদ্দিক (৩৪), মুন্সিগঞ্জ, গজারিয়া, বালুয়া কান্দি।
১৩. আকুতি বেগম (৭০), ১৮/১ আগামাসি লেন, বংশাল।
১৪. মো. ইদ্রিস মির (৬০), মীর হাজারীবাগ যাত্রাবাড়ী,
১৫. নুরুল ইসলাম ভূইয়া (৫৫), মাতুয়াইল, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।
১৬. মো. হৃদয় (২০), সিদ্দিক বাজার জাবেদ গলি, বংশাল।
১৭. মো. সম্রাট (২২)
১৮ মোহাম্মদ সিয়াম (২০)


শেয়ার করুন

Similar Posts