মানবিক বাংলাদেশকে সন্ত্রাসবাদের কাছে সপে দিতে পারি না : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেছেন, “স্বামী বিবেকানন্দের বাণী হচ্ছে বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানো, মানুষকে সহায়তা করা। মানবিকতা প্রতিষ্ঠার জন্য রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। এই মানবিক দেশকে তো আমরা কোন সন্ত্রাসবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার কাছে সপে দিতে পারি না। বরং এই মানবিক বাংলাদেশ ধরে রাখার দায়িত্ব আমাদের দেশের প্রতিটি নাগরিকের।”
আজ শনিবার দিনাজপুর রামকৃষ্ণ আশ্রম ও রামকৃষ্ণ মিশনের শতবর্ষপূর্তির তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের শেষদিনের প্রথম পর্বে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন ।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘ভুলে গেলে চলবে না আমাদের পূর্বপুরুষেরা জীবন দিয়ে দেশ স্বাধীন করে গেছেন। আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন রক্ত দিয়ে হলেও দেশের মানুষের ঋণ পরিশোধ করে যাব। কী শ্রদ্ধাবোধ ছিলো মানুষের প্রতি! এই শ্রদ্ধা কী আমরা দেখাতে পেরেছি ? তিনি শুধু নন, তার পুরো পরিবার দেশের জন্য জীবন দিয়ে গেছেন। তাই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার জন্য স্বামী বিবেকানন্দের ভাবাদর্শ সঙ্গে নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’
অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যদি মানবতায় বিশ্বাস করে থাকি তাহলে বলবো মানবতা আছে এবং থাকবে। এই ভাবধারার উপরে দাঁড়িয়ে আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে বলেছিলেন আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না, বাংলার মানুষের অধিকার চাই। তিনি কিন্তু বলেন নাই হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিষ্টানের অধিকার চাই। এভাবেই একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে সব ধর্ম বর্ণেরম মানুষ অধিকার নিশ্চিত করে মানবিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ত্রিশ লাখ শহীদ, ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম হারানোর মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে। ’
সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রেখে নৌ-প্রতিমন্ত্রী বলেন, “সব ধর্মের মানুষ এক না হলে কখনো মানবতা প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না।
স্বামী বিবেকানন্দ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, স্বামী বিবেকানন্দ মাত্র ৩৯ বছর বেঁচে ছিলেন অথচ তিনি মানুষের মাঝে ঈশ্বরকে খুঁজে পেয়ে বিশ্বে মানবতা ছড়িয়ে দিয়েছেন। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান মানুষের সাথে মিশেছেন, মানুষের মতামতকে প্রাধান্য দিয়েছেন বলেই তিনি মানবতাবাদী হিসেবে পরিচিত।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভারতের আলমোড়ার রামকৃষ্ণ কুটীরের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুবেশানন্দজী মহারাজ। স্বাগত বক্তব্য দেন নারায়নগঞ্জ রামকৃষ্ণ আশ্রম ও রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী একনাথানন্দ মহারাজ। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মনোজ কুমার রায়, দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুজ্জামান মিতা, দিনাজপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলওয়ার হোসেন, দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।
ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মানিকগঞ্জ বালিহাটির রামকৃষ্ণ আশ্রম ও রামকৃষ্ণ মিশন সেবাশ্রমের অধ্যক্ষ স্বামী আদিরূপানন্দ মহারাজ।