গার্মেন্টস শ্রমিকদের আর্থিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের জাতীয় মজুরি নীতি প্রয়োজন: পিটার হাস

শেয়ার করুন

বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আজ বলেছেন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের আর্থিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের জাতীয় মজুরি নীতি প্রয়োজন। শক্তিশালী শ্রম আইন ও এর বাস্তবায়ন ওয়াশিংটন ও ঢাকার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, ‘একটি শক্তিশালী শ্রম আইন ও এর বাস্তবায়ন আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন এবং বাংলাদেশে কর্মরত মার্কিন কোম্পানিগুলোর একটি স্থিতিশীল ও পূর্বাভাসযোগ্য পরিচালন পরিবেশকে সমর্থন করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’ রাজধানীতে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ কটন ডে ২০২৩’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হ্যাস এ মন্তব্য করেন।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, তৈরি পোশাক খাতের জন্য সাম্প্রতিক ন্যূনতম মজুরি পর্যালোচনা ‘একটি বস্তুসিষ্ঠ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রমাণ-ভিত্তিক’ জাতীয় মজুরি নীতির বাস্তব প্রয়োজনীয়তাকে নিদের্শ করেছে- যা গার্মেন্টস শ্রমিকদের গুরুতর অর্থনৈতিক সমস্যাগুলো মোকাবেলা করবে।

তিনি বলেন, ওয়াশিংটন আরএমজি সেক্টর ও এর বাইরেও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কর্মীদের অধিকার এগিয়ে নিতে বেসরকারি খাত ও অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে আরও গভীরভাবে কাজ করতে আগ্রহী।

হাস বলেন, ‘আমরা যদি তৈরি পোশাক খাতের দিকে তাকাই, তবে দেখতে পাই এখানে বাংলাদেশে আমাদের মিশনের অগ্রাধিকারগুলির মধ্যে একটি হলো- এ খাতে একটি টেকসই ও ব্যাপক অংশীদারমূলক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের অব্যাহত প্রবৃদ্ধি ও টেকসইত্বের জন্য শ্রম অধিকার গুরুত্বপূর্ণ, আর শ্রমিকদের মান উন্নয়ন ও ন্যায্য অধিকারের মাধ্যমেই এটি অর্জন সম্ভব এবং বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের অব্যাহত প্রবৃদ্ধি ও টেকসইত্বের জন্য শ্রম অধিকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

‘বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের ক্ষমতায়ন, অধিকার ও উচ্চ শ্রমের মান উন্নয়ন’ বিষয়ে নব ঘোষিত মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোরেন্ডামের দিকে দৃষ্টি আকৃষ্ট করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, এই নতুন নীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমস্ত সরকারি সংস্থাকে অন্যান্য সরকার, শ্রমিক সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন ও সুশীল সমাজের সাথে সম্পৃক্ততা জোরদার করার এবং বেসরকারী খাত সংগঠনের স্বাধীনতা ও সম্মিলিত দর কষাকষির অধিকারের প্রচার ও সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছে।

তিনি বলেন, পৌঁছানোর সাথে সাথেই মার্কিন তুলা ধোঁয়ার প্রয়োজনীয়তা অপসারণের বিষয়ে বাংলাদেশের সিদ্ধান্তটি ২০২৩ সালে এদেশের মার্কিন দূতাবাসের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক বাণিজ্য সাফল্যগুলির মধ্যে একটি।

হাস বলেন, তবে এটি শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাফল্য নয়, এটি বাংলাদেশের সকলের জন্য একটি বিজয়। কারণ এর ফলে আপনারা কম খরচে দ্রুত উচ্চ মানের মার্কিন তুলা আনতে পারেন।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমি শুনেছি যে, ফিউমিগেশনের প্রয়োজনীয়তা অপসারণের ফলে প্রতিঠি মিলের বছরে ৩৫,০০০ ডলার পর্যন্ত সাশ্রয় হচ্ছে।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ধোঁয়ার প্রয়োজনীয়তা অপসারণের সিদ্ধান্তটি বিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে ছিল- যা বিজ্ঞান ভিত্তিক বাণিজ্য সুবিধার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যে অব্যাহত সহযোগিতার নজির স্থাপন করে।

তিনি বলেন, ২০২২ সালে মার্কিন তুলা রপ্তানি প্রায় ৪৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশে মোট মার্কিন রপ্তানির ১৫ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব করে।

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, উচ্চ-মানসম্পন্ন মার্কিন কটন ব্যবহারের জন্য ক্রমবর্ধমান সচেতনতার ওপরই মার্কেট শেয়ার বৃদ্ধি পায়।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ইউএস কটন ট্রাস্ট প্রোটোকলের মাধ্যমে ওয়াশিংটন টেকসই তুলার নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ দিতে পারে। সারা বিশ্বের ব্র্যান্ডগুলোর জন্য এর চাহিদা রয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান ও বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন।


শেয়ার করুন

Similar Posts