বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত যেন নতুন করে লেখা হয়: আমান আযমী
সাবেক সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (বরখাস্ত) আবদুল্লাহিল আমান আযমী বলেছেন,
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত যেন নতুন করে লেখা হয়। বর্তমানে যে জাতীয় সংগীত চলছে তা করেছিল ভারত। দুই বাংলাকে একত্রিত করার জন্য করা হয়েছিল এই জাতীয় সংগীত। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে তাই বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত নতুনভাবে হওয়া উচিত।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে আট বছর গুম থাকার পর সংবাদ সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন আবদুল্লাহিল আমান আযমী। সময় গুম থাকার সময়ের বর্ণনা দেন তিনি।
আবদুল্লাহিল আমান আযমী জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির প্রয়াত গোলাম আযমের ছেলে। ২০১৬ সালের ২২ আগস্ট রাতে আবদুল্লাহিল আমান আযমীকে গুম করা হয় বলে পরিবার জানায়।
আবদুল্লাহিল আমান আযমী বলেন, জাতীয় সংগীত করার জন্য অনেক গান রয়েছে। এই সরকারের উচিত নতুন কমিশন গঠন করে একটি নতুন জাতীয় সংগীত তৈরি করা ।
তিনি বলেন, আমি গেল আট বছর বন্দী থাকা অবস্থায় পৃথিবীর কোনো আলো দেখিনি। প্রতি রাতেই ক্রসফায়ারের ভয় থাকত। তারা খুব দুর্ব্যবহার করত আমার সঙ্গে।
সংবাদ সম্মেলনে আবদুল্লাহিল আমান আযমী বলেছেন, ‘বারবার মনে হতো, তারা হয়তো আমাকে ক্রসফায়ার করে হত্যা করবে। আমি তাহাজ্জদ পড়ে আল্লাহর কাছে শুধু কান্না করতাম। আমার লাশটা যেন আমার পরিবারের কাছে যায়।’
আবদুল্লাহিল আমান আযমী আরও বলেন, ‘যখন আমার বাসায় তারা এল, তখন তাদের কাছে আমি জানতে চেয়েছিলাম, আপনারা কারা, পরিচয় কী, পরিচয়পত্র দেখান। আমাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো ওয়ারেন্ট আছে কি না, তা জানতে চেয়েছিলাম। তারা আমার কথার জবাব দেয়নি।’
তিনি বলেন, ‘একপর্যায়ে আমাকে নিয়ে গাড়িতে ওঠায়। আমার চোখ–মুখ বাঁধা অবস্থায় একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই ফেলে রাখা হয়, অন্ধকার এক ঘরে। টয়লেট যেতে চাইলে চোখ-হাত বেঁধে নিয়ে যেত।’
২০১৬ সালের ২২ আগস্ট রাতে আবদুল্লাহিল আমান আযমীকে তুলে নেওয়া হয়। সে সময় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বলা হয়, রাজধানীর বড় মগবাজারের বাসা থেকে সাদাপোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তাঁকে আটক করা হয়।
৫ আগস্ট রাতে সেনাবাহিনীর সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন সময়ে গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্বজনেরা ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার কচুক্ষেতে সমবেত হয়ে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) ‘আয়নাঘরের বন্দীদের’ মুক্তির দাবি জানান। এরপরই তাঁরা মুক্ত হয়ে ফিরে আসেন।