গাজীপুরের ছয় পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা
গাজীপুরে ছয়টি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ওই কারখানাগুলোতে প্রায় ১৪ হাজার শ্রমিক-কর্মচারি কাজ করছিল। কারখানাগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারী-শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং সম্পত্তি ও জানমাল রক্ষার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
রোববার (৩ নভেম্বর) থেকে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ১৩(১) ধারা মোতাবেক ওই ছয়টি কারখানার সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষিত কারখানাগুলো হলো- তুসুকা জিন্স লিমিটেড, তুসুকা ট্রাউজার্স লিমিটেড, তুসুকা প্রসেসিং লিমিটেড, তুসুকা প্যাকেজিং লিমিটেড, তুসুকা ডেনিম লিমিটেড এবং তুসুকা ওয়াশিং লিমিটেড।
কারখানা কর্তৃপক্ষ কারখানা গেইটে লাগিয়ে দেওয়া নোটিশে জানিয়েছে, শনিবার (২ নভেম্বর) কারখানার শ্রমিক ও অজ্ঞাত বহিরাগত দুষ্কৃতকারীরা অযৌক্তিক দাবিতে বেআইনিভাবে কাজ বন্ধ রাখে। সকালে হাজিরা দিয়ে শ্রমিকরা বের হয়ে কারখানার প্রধান ফটকে জড়ো হয়ে কারখানায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন।
কারখানার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের কাজে যোগদানের অনুরোধ জানান। শ্রমিকরা কর্তৃপক্ষের বৈধ নির্দেশ অমান্য করে কাজে যোগদান না করে উশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, মারামারি ও অরাজকতা করেন। শ্রমিকদের এ ধরনের কার্যকলাপ বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ মোতাবেক অবৈধ ধর্মঘটের শামিল। শ্রমিকদের এহেন কর্মকাণ্ডে কারখানার কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সম্পত্তির নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ায় তুসুকা গ্রুপ বাধ্য হয়ে ৩ নভেম্বর সকাল আটটা থেকে কারখানাগুলোর কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। কারখানা খোলার পরিবেশ সৃষ্টি হলে পরবর্তী সময়ে কর্তৃপক্ষ নোটিশের মাধ্যমে তারিখ জানিয়ে দেবেন।
কারখানার মহাব্যবস্থাপক মাসুম হোসেন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে এবং পুনরায় কাজের উপযোগী পরিবেশ তৈরি হলে কারখানাগুলোর খোলার বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
তিনি আরো জানান, কর্তৃপক্ষের কাছে খবর ছিল কিছু কারখানায় হামলা চালানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ কারণে শ্রম আইন অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ (কোনাবাড়ী জোনের) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবু তালেব এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, শ্রমিকদের কিছু দাবি কারখানা কর্তৃপক্ষ মেনে নিয়েছে। তবে শ্রমিকেরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একমত পোষণ করতে পারেননি। এ কারণে কারখানা কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে নোটিশ দিয়েছে।
উল্লেখ্য, রপ্তানিমুখী ওই পোশাক কারখানায় শনিবার (২ নভেম্বর) সকাল থেকে কাজ বন্ধ রেখে হাজিরা বোনাস, বাৎসরিক বেতন, নাইট বিল, টিফিন বিল বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করেছেন কয়েক হাজার শ্রমিক।