‘বাবা নেই, তা-ও আজও চিঠি লিখি’, একাকিত্বে ভুগছেন রাতাশ্রী!

বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে পুরুষ বন্ধুদের থেকেই বেশি সমর্থন পেয়েছেন বলে জানান রাতাশ্রী। মহিলা বন্ধু কেবল দু’জনই রয়েছেন।
বাবাকে হারিয়েছেন অনেক দিন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আজও বাবাকে চিঠি লেখেন রাতাশ্রী দত্ত। ছোটবেলা থেকেই বন্ধু খুঁজতেন অভিনেত্রী। জীবনে এসেছেন কয়েক জন বন্ধু। কিন্তু একটা সময় পরে তাঁরা অতীত হয়ে গিয়েছেন। তা হলে কি একাকিত্বে ভোগেন অভিনেত্রী? আনন্দবাজার ডট কম-কে জানালেন রাতাশ্রী।
রাতাশ্রী জানান, তাঁর জীবনে বন্ধু ও চিঠির এক বড় ভূমিকা রয়েছে। ‘হাউ আর ইউ ফিরোজ়’ ছবি প্রসঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনের কথাও ভাগ করে নেন রাতাশ্রী। ছবিতে একটি পারসি চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। চরিত্রটি খুবই প্রাণবন্ত। কিন্তু তার মধ্যে একাকিত্ব রয়েছে। রাতাশ্রীর জীবনেও এসেছে একাকিত্ব। তাই অভিনেত্রী বলেন, “খুব ছোট থেকেই আমি বন্ধু খুঁজতাম। কিন্তু তখন বন্ধুর প্রকৃত অর্থ বুঝতাম না। পরিচিত মানেই বন্ধু নয়, এটা বুঝতাম না তখন। সব সহপাঠীকেই বন্ধু ভাবতাম। কিন্তু যখন পাশে সত্যিই বন্ধুর প্রয়োজন ছিল, তখন আমি কাউকে পাইনি। সেই থেকে বুঝেছি বন্ধু কাকে বলে।”
ছোটবেলায় কিছু বন্ধু পেয়েছিলেন। কিন্তু পরে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এমনই এক হারিয়ে যাওয়া বন্ধুকে ফের খুঁজে পাওয়ার অভিজ্ঞতা জানান রাতাশ্রী। তাঁর কথায়, “ক্লাস টেনে আমার এক প্রিয় বান্ধবী ছিল। তার পর স্কুল পাল্টে যায়। দূরে চলে যাই। আমাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। আমার কাছে রয়ে গিয়েছিল সেই বান্ধবীর লেখা একটা চিঠি। তা ছাড়া ওর কোনও ঠিকানা, ফোন নম্বর কিচ্ছু ছিল না। সমাজমাধ্যমেও ওকে পাইনি।”
একটি চিঠিকে আশ্রয় করে সেই বান্ধবীকে খুঁজে বার করেছিলেন অভিনেত্রী। তবে এই চিঠির জন্য মায়ের কাছে বকুনিও খেয়েছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, “মা ভাবত, নিশ্চয়ই কোনও ছেলে আমাকে এই চিঠি দিয়েছে। তাই আমি এমন যত্ন করে রেখেছি। মায়ের কাছে মারও খেয়েছি। ১৩ বছর ওই চিঠি আগলে রেখেছিলাম। তার পরে এক দিন আমি অডিশন দিতে যাই। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন এসেছিলেন অডিশন নিতে। তাঁর সঙ্গে গল্প করতে করতেই জানতে পারি, আমার বান্ধবীও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে।”
চিঠির মাধ্যমেই একসময়ে বাবার সঙ্গে কথা বলতেন তিনি। রাতাশ্রী বলেন, “ছোটবেলায় বাবা অনেক দূরে থাকতেন। মা ফোন ধরতে দিতেন না। তাই বাবার জন্য পাতার পর পাতা চিঠি লিখে রাখতাম। ছ’মাস পরে বাবা এলে তখন সেই চিঠি দিতাম। দীর্ঘ দিন এই ভাবেই বাবার সঙ্গে কথা হত। এখন বাবা আর নেই। কিন্তু বাবাকে চিঠি লেখা এখনও থামেনি।”