কুয়াকাটায় মেরিন ড্রাইভ সড়কের নির্মাণ কাজে দুর্নীতি
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন নির্মানাধীন মেরিন ড্রাইভ সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় সড়কটির নির্মাণ কাজ নিয়ে ফুঁসে উঠেছে ‘কুয়াকাটা স্টুডেন্ট এলায়েন্স’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। বুধবার সন্ধ্যায় মীরাবাড়ি সংলগ্ন পয়েন্টের পশ্চিম পাশে কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট থেকে লেম্বুরবন সড়কের উপরে কাফনের কাপড় সামনে রেখে তারা এ অভিনব প্রতিবাদ জানায়।
প্রতিবছর উপকূলে ঝড়-বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই জনপদ। তাই বেড়িবাঁধ ঘেঁষে নির্মিত সড়কটি তাদের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অথচ সেই সড়কেই চলছে নিম্নমানের কাজ, এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, জিরো পয়েন্ট থেকে লেম্বুরবন পর্যন্ত ৩ কোটি টাকা ব্যায়ের ৩ কিলোমিটার এ সড়কটি নির্মাণের কাজ পায় ‘ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সড়কে মাটির বদলে লবনাক্ত বালু ব্যবহার, খোয়ার পরিমাণ কম দেওয়া এবং নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের ফলে এমন অভিনব প্রতিবাদ জানায় স্টুডেন্টস এলায়েন্স সহ এলাকাবাসী।ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী চলতি মাসের ২৫ তারিখ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো প্রায় ৪০ শতাংশ কাজ বাকি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কে মাটির বদলে বালু ব্যবহার, লবণাক্ত বালু উত্তোলন, খোয়ার পরিমাণ কম দেওয়া এবং নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের ফলে সড়কটি টেকসই হচ্ছে না।
স্টুডেন্ট এলায়েন্সের প্রতিনিধি রিপন সাব্বির বলেন,এই দুর্নীতি দুর করতে হলে শুধু মানুষ পরিবর্তন হলেই হবেনা,আমাদের সকলের মনের পরিবর্তন হতে হবে।আমরা এই কাজের অনিয়ম, দুর্নীতির জরুরী সমাধান চাই।
স্থানীয় বাসিন্দা কাদের হাওলাদার বলেন, “আগে রাস্তা ভালোই ছিল। এখন আধা ইঞ্চি ঢালাই দিয়ে কাজ করছে। এমন মানহীন রাস্তা আমরা চাই না। ঠিকভাবে করতে পারলে করুক, না পারলে কাজ বন্ধ করুক।”
জেলে রাজিব বলেন, এই বেড়িবাঁধ জলোচ্ছ্বাস থেকে আমাদের বাঁচায়। এখানে অনিয়ম হলে আমাদের ভোগান্তির শেষ থাকবে না।
পর্যটকরাও সড়কের মান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ঢাকা থেকে আগত পর্যটক আসিব মাহমুদ বলেন, লোকজন হাত দিয়ে কার্পেট তুলে দেখাচ্ছিলেন। দাঁড়িয়ে দেখি কাজের মান খুবই খারাপ। পর্যটন এলাকাতে এমন অনিয়ম দুঃখজনক।
এ বিষয়ে ঠিকাদার মো, জসিম মৃধা দাবি করেন, এখানে ৪০ মিলি কার্পেটিং দরকার ছিল, কিন্তু আমাকে দেওয়া হয়েছে ২৫ মিলি। এতে বিপাকে পড়েছি। আশপাশে মিষ্টি পানির ব্যবস্থাও নেই। বরাদ্দে ড্রেজিংয়ের বালু থাকলেও ১৫ কিলোমিটার দূর থেকে বালু এনে কাজ করতে হচ্ছে। তারপরও আমরা ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী কাজ করছি।
এ বিষয়ে এলজিইডির পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হোসাইন আলী মীর বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। কিছু অনিয়ম পাওয়া গেছে। ঠিকাদারকে নিয়ম মেনে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী কাজ না হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
