চার দিনের সফরে আজ বেইজিং যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
চীনের প্রিমিয়ার অব দ্য স্টেট কাউন্সিল লি শিয়াংয়ের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার দিনের সরকারি সফরে আজ সোমবার বেইজিং যাচ্ছেন। রোববার সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর উপলক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে সফরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
চীনের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দু’দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হবে, কোনো চুক্তি হচ্ছে না। চীন আমাদের বড় উন্নয়ন সহযোগী। প্রচুর চীনা বিনিয়োগ বাংলাদেশে রয়েছে। গত কয়েক দশকে চীন বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে বড় ভূমিকা রেখেছে। আমাদের উন্নয়নের বিষয়টি মূল অগ্রাধিকার পাবে। সেই সঙ্গে গুরুত্ব পাবে অর্থনৈতিক সহযোগিতা।
সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ১০ জুলাই বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলসহ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন। এর পর দুই দেশের সরকারপ্রধানের উপস্থিতিতে প্রায় ২০টির মতো সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে এবং কিছু প্রকল্প উদ্বোধনের ঘোষণা দেওয়া হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং খাত, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, ডিজিটাল ইকোনমি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি খাতে সহায়তা, ষষ্ঠ ও নবম বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ ব্রিজ নির্মাণ, বাংলাদেশ থেকে কৃষিপণ্য রপ্তানি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ প্রভৃতি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সম্ভাবনা আছে।
৮ থেকে ১১ জুলাই সফরকালে প্রধানমন্ত্রী চীনের প্রেসিডেন্ট, প্রিমিয়ার অব দ্য স্টেট কাউন্সিল, সিপিপিসিসির জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
অর্থমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্র সচিবসহ উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হবেন।
তিনি জানান, মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিন লিকুনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এর পর তিনি সাংগ্রিলা সার্কেলে অনুষ্ঠেয় ‘সামিট অন ট্রেড, বিজনেস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজ বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড চীন’ শীর্ষক সম্মেলনে অংশ নেবেন। বাংলাদেশের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল সম্মেলনে যোগ দেবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেদিন দুপুরে প্রধানমন্ত্রী চায়নিজ পিপলস পলিটিক্যাল কনসাল্টেটিভ কনফারেন্সের (সিপিপিসিসি) ১৪তম জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াং হুনিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক এবং বিকেলে ঐতিহ্যবাহী তিয়েনআনমেন স্কয়ারে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করবেন। রাতে তিনি বেইজিংয়ের বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন।
সফরের তৃতীয় দিনে ১০ জুলাই প্রধানমন্ত্রী গ্রেট হল অব দ্য পিপলে তাঁর সম্মানে আয়োজিত অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান শেষে চীনের প্রিমিয়ার অব দ্য স্টেট কাউন্সিল লি শিয়াংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলসহ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন। এর পর দুই দেশের সরকারপ্রধানের উপস্থিতিতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধনের ঘোষণা হবে।
বুধবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর উপলক্ষে দুই দেশ যৌথ বিবৃতি দেবে। ১১ জুলাই বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রীর চীন ত্যাগ করে দুপুরে ঢাকায় পৌঁছার কথা।